রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৪২ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী, কালের খবর :
দুর্নীতিবাজদের দৃশ্যমান শাস্তি না হলে দুর্নীতি বন্ধ হবে না: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
দুর্নীতি দেশের প্রধান শত্রু বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের গঠন করা অর্থনৈতিক শ্বেতপত্র প্রস্তুতি কমিটির সভাপতি ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, দেশের ভেতরে যারা দুর্নীতি করেছেন, তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। দুর্নীতিবাজদের দৃশ্যমান শাস্তি না হলে দুর্নীতি বন্ধ হবে না।
বুধবার (৯ অক্টোবর) রাজশাহীর একটি হোটেলের দেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থার শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি আয়োজিত জনশুনানিতে তিনি এই মন্তব্য করেন।
জনশুনানিতে বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে শ্বেতপত্র প্রণয়নের জন্য বিভিন্ন বিষয়ের ওপর আলোচনা করা হয়। এতে অংশ নিয়ে রাজশাহীর বিভিন্ন শ্রেণিপেশার নাগরিকেরা দেশজুড়ে অর্থনৈতিক অনিয়ম, মেগা প্রকল্প, অপ্রয়োজনীয় ফ্লাইওভার, জলাবদ্ধতা, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, সিটি করপোরেশন এবং ওয়াসার মতো সংস্থার নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
এ সময় ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, আমরা লক্ষ্য করেছি, কিভাবে সচিবরা ব্যবসায়ী এবং ব্যবসায়ীরা রাজনীতিবিদে পরিণত হয়েছেন। অনেকে মনে করেন, শুধুমাত্র ব্যবসায়ীরাই রাজনীতিতে আসেননি, বরং রাজনীতিবিদরাও ব্যবসায় জড়িয়ে গেছেন।
তিনি বলেন, ‘বিগত সময়ে রাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গই কোনো না কোনোভাবে দুর্নীতিতে যুক্ত হয়েছে। যাদের আইন প্রণয়ন করার কথা, তারাও দুর্নীতিতে যুক্ত হয়েছে। যাদের আইনের সুরক্ষা দেওয়ার কথা, তারাও দুর্নীতিতে যুক্ত হয়েছে। যারা আইন প্রয়োগ করার কথা, তারাও দুর্নীতিতে যুক্ত হয়েছে। এই বুহগ্রাসী দুর্নীতি আমরা যদি দূর করতে না পারি, তাহলে অনেক সম্ভাবনাই কার্যকারী হবে না।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যতের সম্ভাবনাগুলো কার্যকর করতে হলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। পাচার হয়ে যাওয়া টাকা দেশে ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি দেশের ভেতরে যারা দুর্নীতিতে জড়িত তাদেরও কঠিন শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে। যদি তাদের দৃশ্যমান শাস্তি না হয়, তাহলে দুর্নীতি বন্ধ হবে না, আমাদের নীতি ও মূল্যবোধভিত্তিক যে সমাজের স্বপ্ন দেখছি, তা দুর্বল হয়ে পড়বে।
জনশুনানি সঞ্চালনায় ছিলেন ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। এ সময় শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্য ও ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ডিন, অর্থনীতি ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধ্যাপক এ কে এনামুল হক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক শরমিন্দ নীলোর্মি, রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. ম তামিম ছিলেন।